অনলাইনে নতুন ভোটার আইডি কার্ড করার নিয়ম ২০২২ | নতুন ভোটার নিবন্ধন ২০২২
অনলাইনে নতুন ভোটার হওয়ার আবেদন করার জন্য সর্বনিম্ন বয়স ১৬ হতে হবে। ১৬ বছর এর কম হলে আপনি ভোটার আইডি কার্ডের জন্য আবেদন করতে পারবেন না।
আপনার বয়স ১৬ বা এর বেশি হয়ে থাকলে আপনি ভোটার আইডি কার্ড করার জন্য অনলাইনে রেজিষ্ট্রেশন করতে পারবেন। আজকের এই পোস্টের মাধ্যমে দেখাবো আপনারা কিভাবে অনালাইনে ভোটার আইডি কার্ডের জন্য রেজিস্ট্রেশন করবেন। আরো দেখাবো, অনলাইনে কিভাবে ভোটার হওয়া যায়? কিভাবে আপনি নিজেই মোবাইল বা কম্পিউটারের সাহায্যে আপনার জাতীয় পরিচয়পত্রের জন্য রেজিস্ট্রেশন (NID Online Registration) করবেন।
ভোটার আইডি কার্ড বা জাতীয় পরিচয় পত্র করতে যা যা লাগবে
এখন যে কেও চাইলে যেকোন সময় ভোটার আইডি কার্ড রেজিষ্ট্রেশন করতে পারবেন। আপনি যদি বাংলাদেশের নাগরিক হয়ে থাকেন তাহলে আপনাকে অবশ্যই ভোটার আইডি কার্ড বা জাতীয় পরিচয় পত্র করতে হবে। জাতীয় পরিচয় পত্র করা প্রত্যেক নাগরিকের জন্য বাধ্যতামূলক।
অবশ্যই আপনাকে ভোটার আইডি কার্ড বা জাতীয় পরিচয় পত্র সংগ্রহ করতে হবে।
ভোটার হতে কী কী যোগ্যতা লাগবে?
- বাংলাদেশের নাগরিক হতে হবে।
- আপনার বয়স অবশ্যই ১৬ হতে হবে।
- পূর্বে জাতীয় পরিচয় পত্র করা হয় নাই।
নতুন ভোটার হতে কি কি লাগে?
আপনাকে আগে অবশ্যই অনলাইন এর মাধ্যমে আবেদন করে আবেদন ফরম এর সাথে নিচের ডকুমেন্টস গুলো স্বঃস্বঃ নির্বাচন অফিসে জমা দিতে হবে। নতুন ভোটার হতে যা যা লাগেঃ
- অনলাইন আবেদন করা ফরমের প্রিন্ট কপি
- S.S.C. অথবা সমমানের সার্টিফিকেট (বয়স প্রমাণের জন্য)
- জন্ম নিবন্ধন ফরম (বয়স প্রমাণের জন্য)
- পাসপোর্ট / ড্রাইভিং লাইসেন্স / টিন সার্টিফিকেট (যাদের S.S.C. অথবা সমমানের সার্টিফিকেট নাই তাদের জন্য)
- বাবা, মা, স্বামী/স্ত্রীর আইডি কার্ডের ফটোকপি (এইটা বাধ্যতামূলক)
- ইউটিলিটি বিলের কপি/বাড়ি ভাড়ার রসিদ/হোল্ডিং ট্যাক্স রসিদ (ঠিকানার প্রমাণ হিসেবে)
- নাগরিকত্ব সনদ (প্রযোজ্য হিসাবে)
নতুন ভোটার আইডি কার্ড করার নিয়ম | Online NID Registration
অনেকের মনে প্রশ্ন থাকে ভোটার আইডি কার্ড বা জাতীয় পরিচয় পত্র কিভাবে করব? নতুন ভোটার আইডি কার বা জাতীয় পরিচয় পত্র রেজিষ্ট্রেশন করা এখন আগের থেকে অনেক সহজ হয়ে গেছে।
ভোটার আইডি কার্ড বা জাতীয় পরিচয় পত্র আগে অনলাইন থেকে রেজিষ্ট্রেশন করে যাবতীয় কাগজ পত্র নিয়ে নিকটতম নির্বাচন অফিসে জমা দিতে হবে।
জমা দেওয়ার পর কাগজ পত্র ঠিক থাকলে নির্বাচন অফিস থেকে আপনাকে একটি ভোটার নিবন্ধন স্লিপ দেয়া হবে। এর ১ মাসের মধ্যেই আপনার জাতীয় পরিচয়পত্রের আবেদনটি অনুমোদিত হলে আপনি অনলাইন থেকে জাতীয় পরিচয় পত্র ডাউনলোড করতে পারবেন।
নতুন ভোটার আইডি কার্ড বা জাতীয় পরিচয় পত্র যেভাবে করতে হবে:
- অনলাইনে রেজিষ্ট্রেশন
- ব্যক্তিগত তথ্য প্রদান
- অনলাইন আবেদন জমা
- আবেদন ভেরিফিকেশন
- বায়োমেট্রিক প্রদান (Biometric Information- Picture, Fingerprint)
- জাতীয় পরিচয়পত্র ডাউনলোড/ সংগ্রহ
১: অনলাইনে রেজিষ্ট্রেশন
একাউন্ট রেজিষ্ট্রেশন করার জন্য প্রথমে এই লিংকে প্রবেশ করুন।
ক্লিক করার পর এইরকম একটি পেইজ আসবে।
এরপর আবেদন বাটনে ক্লিক করুন।
এরপর এখানে আপনার নাম, জন্মতারিখ এবং Verification এর কোডটি লিখে বহাল বা সাবমিট বাটনে ক্লিক করুন।
এরপর নাম্বার ভেরিফিকেশন করতে বলবে, একটি সচল মোবাইল নাম্বার দিতে হবে। সে নাম্বারে ৬ ডিজিটের একটি ভেরিফিকেশন কোড যাবে।
অবশ্যই যে আইডি কার্ড করবে তার নিজের মোবাইল নাম্বার টি দিতে হবে না দিলেও সমস্যা নাই। তবে মোবাইল নাম্বারটি সংগ্রহ করে রাখতে হবে। কারণ ভবিষ্যতে লগইন করার জন্য বা পাসওয়ার্ড পরিবর্তনের জন্য নম্বরটি প্রয়োজন হবে।
এরপর মোবাইলে আসা ৬ ডিজিটের ভেরিফিকেশন কোডটি বসিয়ে বহাল বাটনে ক্লিক করুন।
এরপর আপনাকে একটা ইউজার নেম এবং পাসওয়ার্ড সেট করতে হবে। ভবিষ্যতে যেনো এই ইউজার নেম এবং পাসওয়ার্ড দিয়ে লগিন করা যায়।
অবশ্যই আপনাকে ইউনিক ইউজার নেম দিতে হবে। যা আপনি মনে রাখতে পারবেন।
ভালো হয় যদি ইউজারনেম ইংরেজি নাম ও সংখ্যার মিশ্রনে দিতে পারেন এবং পাসওয়ার্ড কমপক্ষে ৮ ডিজিটের হতে হবে।
২. ব্যক্তিগত তথ্য প্রদান
জাতীয় পরিচয় পত্র বা ভোটার আইডি কার্ড এর জন্য রেজিস্ট্রেশন করার পর নিচের মত একটা ড্যাশবোর্ড দেখতে পারবেন। যদি না আসে তাহলে একটু আগে যে ইউজার নেম এবং পাসওয়ার্ড দিয়ে রেজিষ্ট্রেশন করছেন সেটি দিয়ে লগিন করুন।
এখন প্রোপাইল অপশনে ক্লিক করুন। ক্লিক করার পর উপরের ডান পাশ থেকে ইডিট অপশনে ক্লিক করুন।
এরপর নিচের মত একটি পেইজ ওপেন হবে, যেখানে আপনার ব্যক্তিগত তথ্য, অন্যান্য তথ্য ও ঠিকানা লিখতে হবে।
এই পেইজের মধ্যে আপনার যাবতীয় ইনফরমেশন দিতে হবে।
আপনার বাবা এবং মায়ের নাম ও জাতীয় পরিচয় পত্র নাম্বার দিতে হবে।
বড়ভাই বা বোনের তথ্য না দিলেও সমস্যা নাই, তবে যদি থাকে দিবেন তাহলে ভবিষ্যতের জন্য ভালো হবে।
আপনি যদি বিবাহিত হয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই বৈবাহিক অবস্থা দিতে হবে এবং স্বামী/স্ত্রীর নাম এবং ভোটার আইডি কার্ডের নাম্বার দিতে হবে।
এরপর ২য় অংশতে যাওয়ার জন্য অন্যান তথ্যে ক্লিক করুন।
এরপর এখানে আপনার শিক্ষাগত যোগ্যতা, পেশা ও ধর্ম সিলেক্ট করুন। অন্য তথ্যগুলো সম্ভব হলে দিতে পারেন, না দিলেও কোন সমস্যা হবেনা।
এরপর ৩য় অংশ ঠিকানা অপশনে ক্লিক করুন এবং আপনার বর্তমান ও স্থায়ী ঠিকানা দিন।
আপনার অবস্থানরত দেশ বাছাই করুন। তারপর আপনি বর্তমান নাকি স্থায়ী ঠিকানায় ভোটার হতে চান সেই ঠিকানার পাশে (এই ঠিকানায় ভোটার) এর পাশে টিক দিন।
বর্তমান ঠিকানা ও স্থায়ী ঠিকানা নির্বাচন করুন এবং ভোটার এরিয়া নির্বাচন করুন।
৩: অনলাইন আবেদন জমা
অনলাইন রেজিষ্ট্রেশন এবং প্রোপাইল ইডিট কারার পর কাজ হচ্ছে অনলাইন আবেদন জমা দেওয়া।
আপনি যে প্রোপাইল ইডিড করছেন সেগুলো ভালো করে চেক করুন কোথাও ভূল আছে কিনা। যদি ভূল থাকে সংশোধন করে নিন।
অনলাইনে আবেদন করা হয়ে গেলে, ড্যাশবোর্ড থেকে আপনার আবেদন ফর্মটি ডাউনলোড করে A4 সাইজ কাগজে প্রিন্ট করে নিন। এরপর আপনি যে এলাকায় ভোটার হবেন সে এলাকার নির্বাচন অফিসে আবেদনটি অন্যান্য কাগজপত্র সহ আবার জমা দিন। ব্যস, আপনার আবেদন প্রক্রিয়া শেষ।
৪: আবেদন ভেরিফিকেশন
ভোটার আবেদন করার পর অনলাইন ফরম এর সাতে যে কাগজ পত্র গুলো জমা দিয়েছেন সে কাগজ পত্র গুলো উপজেলা নির্বাচন অফিসে যাচাই বাছাই করে আপনাকে জানিয়ে দিবে।
আবেদন ভেরিফিকেশন কমপ্লিট হয়ে গেলে আপনাকে একটা ভোটার স্লিপ নাম্বার দিবে। সেটি সংগ্রহ করে রাখুন। সে স্লিপে বায়োমেট্রিক প্রদানের জন্য সময় দেওয়া হবে।
৫: বায়োমেট্রিক প্রদান (Biometric Information- Picture, Fingerprint)
বায়োমেট্রিক প্রদানের সময় হয়ে গেলে ভোটার স্লিপ টি উপজেলা নির্বাচন অফিসে নিয়ে যাবেন। এরপর আপনার ছবি সহ যাবতীয় যা কাজ আছে তা করা কমপ্লিট হয়ে যাবে।
সব কাজ শেষ হওয়ার ১ মাসের মধ্যে আপনি যে নাম্বার দিয়ে রেজিষ্ট্রেশন করেছেন সে নাম্বারে একটি মেসেজ যাবে, সেখানে ভোটার আইডি নাম্বার দেওয়া থাকবে। যা দিয়ে আপনি ভোটার আইডি কার্ড ডাউনলোড করতে পারবেন। সেটি সংগ্রহ করে রাখবেন।
৬: জাতীয় পরিচয়পত্র ডাউনলোড
আপনার ভোটার আইডি কার্ড কমপ্লিট হয়ে গেলে আপনার মোবাইলে একটি মেসেজ দেয়া হবে। সেটি আসলে বুঝে নিবেন আপনার ভোটার আইডি কার্ড কমপ্লিট হয়ে গেছে। এখন আপনাকে সেটি ডাউনলোড করতে হবে। ডাউনলোড করার জন্য আপনার প্রোফাইলে লগইন করুন এবং ডাউনলোড অপশন এ ক্লিক করে আপনার ভোটার আইডি কার্ড ডাউনলোড করে ফেলুন।
আপনাকে উপজেলা থেকেও একটি আইডি কার্ড বা স্মার্ট আইডি কার্ড দেওয়া হবে।
যতদিন পর্যন্ত উপজেলা থেকে আইডি কার্ড দেয়া হবে না ততদিন পর্যন্ত অনলাইন কপি ভোটার আইডি কার্ড দিয়ে কাজ করতে পারবেন।
নতুন ভোটার নিবন্ধন সংক্রান্ত বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর
প্রশ্ন: আমি পূর্বে যথাসময়ে ভোটার হতে পারিনি, এখন কিভাবে ভোটার হব?
উত্তর: আপনি যেকোন সময় ভোটার হতে পারবেন। অনলাইন রেজিষ্ট্রেশন এর মাধ্যমে ভোটার হতে পারবেন যেকোম সময়।
প্রশ্ন: আমি ভোটার হয়েছি কিন্তু আইডি কার্ড সংগ্রহ করতে পারিনি।
উত্তর: উপজেলা নির্বাচন অফিস থেকে আপনার আইডি কার্ড সংগ্রহ করতে পারবেন। যদি সেখানে খুঁজে পাওয়া না যায়, তাহলে অনলাইনে রিইস্যু করার জন্য আবেদন করতে হবে। আবেদন এপ্রোব হলে আপনার মোবাইলে একটি মেসেজ পাঠানো হবে। এরপর অনলাইন থেকে আপনার এনআইডি কার্ড এর অনলাইন কপি ডাউনলোড করতে পারবেন।
প্রশ্নঃ নতুন ভোটার হওয়ার ক্ষেত্রে কি কি কাগজপত্র প্রয়োজন?
উত্তর: পোস্টের মধ্যে দেওয়া আছে চেক করুন।
প্রশ্ন: ভোটার নিবন্ধনের ক্ষেত্রে নামের সাথে বিভিন্ন খেতাব, পেশা, ধর্মীয় উপাধি, পদবী ইত্যাদি যুক্ত করা যাবে কিনা?
উত্তর: না
0 Comments
দয়া করে নীতিমালা মেনে মন্তব্য করুন